করোনা সন্দেহে মৃত ব্রাহ্মন এর দেহ সৎকারে পিছিয়ে গেল স্বজনরা , এগিয়ে এলেন মুসলিমরা

27th October 2020 9:50 pm বর্ধমান
করোনা সন্দেহে মৃত ব্রাহ্মন এর দেহ সৎকারে পিছিয়ে গেল স্বজনরা , এগিয়ে এলেন মুসলিমরা


প্রদীপ চট্টোপাধ‍্যায় ( বর্ধমান ) :  করোনা আক্রান্ত না হওয়া সত্ত্বেও স্বজনরা কেউ এগিয়ে আসেননি হিন্দু পরিবারের বৃদ্ধর মৃতদেহ সৎকার করতে । এই পরিস্থিতিতে তিন দিন ধরে পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমা হাসপাতাল মর্গে পড়েছিল অশীতিপর বৃদ্ধ সন্তোষ ঘোষালের মৃতদেহ । মন্তেশ্বরের মামুদপুর গ্রাম নিবাসী ব্রাহ্মণ বৃদ্ধর এমন করুণ পরিণতি মেনেনিতে পারেন নি পাশের গ্রামের মুসলিম মানুষজন । এলাকার যুবক ফরিয়াদ মল্লিক  ও তাঁর সতীর্থরা মৃতর মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার পৌছে যান কালনা হাসপাতাল মর্গে । সেখান থেকে মৃতদেহ নিয়ে এসে হিন্দু শাস্ত্র মতে তারা গ্রামের শ্মশানে ব্রাহ্মন বৃদ্ধের দেহ সৎকার সারলেন। মুসলিম যুবকদের এমন মহানুভবতার তারিফ করেছেন আপামোর মন্তেশ্বরবাসী ।  মৃতর মেয়ে মণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন  বলেন , তাঁর  সত্তরোর্ধ্ব বাবা সন্তোষ ঘোষাল কিডনির  অসুখে ভুুগছিলেন । কয়েকদিন আগে উনার শারীরিক অসুস্থতা বাড়ে । ওই দিন তাঁরা সন্তোষ বাবুকে নিয়ে যান মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থকেন্দ্রে । চিকিৎসা শুরুর আগে করোনা পরীক্ষার জন্য সেখানে সন্তোষবাবুর লালা রসের নমুনা সংগ্রহ করেন চিকিৎসক । সন্তোষবাবুর স্ত্রী ও কন্যা অভিযোগ করেছেন ,রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত হাসপাতালে কোন চিকিৎসাই হয়না বৃদ্ধর ।  সেই কারণে কার্যত বিনা চিকিৎসায়  সন্তোষ বাবুর মৃত্যু হয় । তার পর পিপি কিট পরিয়ে মৃতদেহ পাঠিয়ে দেওয়া কালনা মহকুমা হাসপাতাল মর্গে । তারই মধ্যে কেউ গ্রামে রটিয়ে দেয় করোনা আক্রান্ত হয়ে সন্তোষ বাবুর মৃত্যু হয়েছে । যা নিয়ে সবার মধ্যে  আতঙ্ক তৈরি হয় । মৃতর মেয়ে আরও বলেন ,তাঁর বাবার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরেও স্বজনরা ও  গ্রামের লোকজন মুখ ফিরিয়ে নিয়ে থাকেন । কেউ তাঁর বাবার মৃতদেহ সৎকার করতে যেতে চান না । কালনা হাসপাতাল মর্গেই তিন দিন ধরে মৃতদেহ পড়ে থাকে ।মণিকা দেবী বলেন ,এদিন পাশের গ্রামের ফরিয়াদ মল্লিক সহ অপর মুসলিম ভাই ও দাদারা এদিন এগিয়ে আসায় তিনি তাঁর বাবার দেহ সৎকার্য সম্পন্ন করতে সক্ষম হলেন । ফরিয়াদ মল্লিক এদিন বলেন ,‘মোরা এক বৃন্তে দুই টি কুসুম হিন্দু মুসলমান’। এটা যে   নিছক কথার কথা নয় সেটা তাঁরা বোঝেন । ফরিয়াদ বলেন , করোনা আক্রান্ত না হওয়া সত্ত্বেও এক হিন্দু ব্রাহ্মন বৃদ্ধের দেহ সৎকারে কেউ এগিয়ে আসছে না এটা তাঁদের ব্যাথিত করেছিল । তাই  ব্রাহ্মণ বৃদ্ধের সৎকার্যের দায়িত্ব তাঁরাই কাঁধে তুলে নেন । হিন্দু শাস্ত্র মতেই ব্রাহ্মণ বৃদ্ধের দেহ সৎকার সম্পন্ন হয়েছে । 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।